প্রকাশিত:
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
নিজের সঙ্গে ঘটা এই ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন জো টিডি। যা প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করেছে বিবিসি। প্রতিবেদনটি সারসংক্ষেপ নিচে তুলে ধরা হলো—
কিন্তু কিছুদিন আগে একটি অপরাধী চক্র যখন আমাকে সরাসরি প্রস্তাব দেয়, তখন হ্যাকাররা কীভাবে প্রতিষ্ঠানের ভেতরের কর্মীদের ব্যবহার করে, সেই অভিজ্ঞতা আমার হয়।
হ্যাকারদের প্রথম বার্তাটি ছিল, “যদি আপনার আগ্রহ থাকে, তবে বিবিসি হ্যাক করতে আপনার কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ দিলে মুক্তিপণের ১৫% আমরা আপনাকে দিতে পারি।”
জুলাই মাসে 'সিগন্যাল' নামের গোপন চ্যাট অ্যাপে 'সিন্ডিকেট' নামে এক ব্যক্তি হঠাৎ আমাকে এই বার্তাটি পাঠায়। লোকটাকে আমি চিনতাম না, কিন্তু কী নিয়ে বার্তা, তা এক মুহূর্তেই বুঝে গেলাম।
আমাকে লোভ দেখানো হচ্ছিল— আমি যদি সাইবার অপরাধীদের আমার ল্যাপটপের মাধ্যমে বিবিসির সিস্টেমে ঢুকতে সাহায্য করি, তবে আমাকে একটা বড় অঙ্কের টাকার ভাগ দেওয়া হবে। তারা তথ্য চুরি করবে বা ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম ঢুকিয়ে আমার প্রতিষ্ঠানকে জিম্মি করবে, আর আমি চুপিসারে ভাগটা নেব। এমন ঘটনা আগে শুনেছি বটে।
বিবিসির একজন জ্যেষ্ঠ সম্পাদকের পরামর্শ নিয়ে আমি 'সিন্ডিকেট'-এর সঙ্গে কথা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। বিশ্বজুড়ে সাইবার হামলা যখন মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত করছে, তখন এই অপরাধীরা তাদের বিশ্বাসঘাতক কর্মীদের সঙ্গে কীভাবে রফা করে, তা জানার আগ্রহ ছিল আমার।
এই পর্যায়ে আমি ‘সিন’ (হ্যাকার) এর সাথে তিন দিন ধরে কথা বলছিলাম এবং আমি বুঝলাম, যথেষ্ট হয়েছে। এরপর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আমার বিবিসির তথ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা দরকার।
আমি বিবিসির তথ্য নিরাপত্তা টিমের সাথে যোগাযোগ করলাম এবং সতর্কতা হিসেবে তারা আমাকে বিবিসি সিস্টেম থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিল। কোনো ই-মেইল নয়, কোনো অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক নয়, কোনো সুযোগ-সুবিধাই থাকল না।
আমি তাদের জানালাম যে এখন আমি বিবিসি সিস্টেম থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছি এবং এতে আমি বিরক্ত। ‘সিন’ জোর দিয়ে বলল যে আমি চাইলে তাদের প্রস্তাবটা এখনো গ্রহণ করতে পারি। কিন্তু আমি কয়েক দিন উত্তর না দেওয়ায়, তারা তাদের ‘সিগন্যাল’ অ্যাকাউন্টটি মুছে ফেলে এবং উধাও হয়ে যায়।